বহুকাল আগে থেকেই আমাদের দেশে পান্তাভাত খাওয়ার রীতি চলে আসছে। অনেক বাড়িতেই সকালের খাবার হিসেবে পান্তাভাত রাখা হয়। বিশেষ করে গ্রামের দিকে এমনটি বেশি হয়ে থাকে। যদিও শহরাঞ্চলে এর প্রচলন নেই বললেই চলে।
মূলত ভাত সংরক্ষণের সহজ পদ্ধতিকে পান্তাভাত বলা হয়। রাতে খাবারের পর অবশিষ্ট ভাত যাতে নষ্ট হয়ে না যায়, এ জন্য সেই ভাতকে নির্দিষ্ট পরিমাণ পানিতে সারারাত ভিজিয়ে রাখলে তা পান্তা হয়। আবার কেউ কেউ বিশেষত মাটির তৈরি পাত্রে এবং ঘরের তাপমাত্রায় নির্দিষ্ট পরিমাণ পানিতে ভাত রেখে দেন। সকালে এটি পান্তা হয়।
কিন্তু পান্তাভাত আসলে উপকারী, না অপকারী―এ ব্যাপারে বলেছেন পুষ্টিবিদ সামিয়া তাসনিম।
এ পুষ্টিবিদ বলেন, পান্তাভাতে ফেনোলিক, লিনোলেয়িক অ্যাসিড, অ্যান্থোসায়ানিন, ফ্ল্যাভনয়েডস, ফাইটোস্টেরল, ভিটামিন ই, ভিটামিন বি১২-এর মতো উপকারী উপাদান রয়েছে। আবার ল্যাকটোব্যাসিলাস, ল্যাকটিক অ্যাসিড ব্যাকটেরিয়াগুলোর মতো উপকারী প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ হওয়ায় পান্তাভাত স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। ভালো হজম থেকে শুরু করে জিআইটি শক্তিশালী করে এবং রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি করে পান্তাভাত। তবে কিছু ব্যক্তির জন্য পান্তা ভাত অনেক ক্ষতিকর।
বিশেষভাবে, যাদের জন্য পান্তা ভাত এড়িয়ে যাওয়া উচিত:
অ্যালার্জি: পান্তা ভাতে থাকা কিছু উপাদান কিছু মানুষের অ্যালার্জির কারণ হতে পারে।
হজম সমস্যা: যারা আগে থেকেই হজমের সমস্যা বা গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল রোগে ভুগছেন, তাদের পান্তা ভাত এড়িয়ে যাওয়া ভালো।
ডায়াবেটিস: পান্তা ভাতে কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ বেশি থাকে, যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সমস্যা তৈরি করতে পারে।
অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা: যারা কিডনির সমস্যা, লিভারের সমস্যা বা অন্যান্য গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছেন, তাদের পান্তা ভাত খাওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
পান্তাভাত একটি ঐতিহ্যবাহী খাবার, যা অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা দিতে পারে। তবে, কিছু মানুষের জন্য এটি ক্ষতিকারক হতে পারে। তাই, আপনার ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য পরিস্থিতি বিবেচনা করে পান্তা ভাত খাওয়া উচিত, এবং প্রয়োজন অনুযায়ী ডাক্তারের পরামর্শ নিতে পারেন।
