প্রায় ৫০ বছর ধরে বিনা পারিশ্রমিকে কবর খোঁড়ার কাজ করেন কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলার মনু মিয়া। এই কাজে ঘোড়ার পিঠে চড়েই দিন-রাত একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে ছুটে চলতেন তিনি। এভাবেই তিন হাজারেরও বেশি কবর খুঁড়ে ‘শেষ ঠিকানার’ কারিগর হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন।
সম্প্রতি বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন মুন মিয়া। এরই মধ্যে ঘটে এক হৃদয় বিদারক ঘটনা। বাড়িতে রেখে যাওয়া তার শেষ অবলম্বন ঘোড়াটিকে মেরে ফেলা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কয়েকদিন আগে বাড়ির পাশে ঘাস খাওয়ার সময় দুর্বৃত্তরা বল্লমের আঘাতে ঘোড়াটিকে হত্যা করে। মনু মিয়ার শারীরিক অবস্থার কথা চিন্তা করে পরিবারের লোকজন তাকে এ খবর জানায়নি এখনও।
স্বজনরা জানান, ১০ বছর আগে জমি বিক্রি করে একটি ঘোড়া কেনেন মনু মিয়া। যার পিঠে চড়ে ছুটে যেতেন কবর খুঁড়তে। শেষ বিদায় জানাতেন মানুষকে। ঘোড়াটির মৃত্যুতে এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান বাহাউদ্দিন বলেন, ‘মনু মিয়ার ঘোড়াটিকে যারা হত্যা করেছে, তাদেরকে আইনের মাধ্যমে বিচারের সম্মুখীন করা হবে। মিঠামইন থানায় একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। যারা এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত আমরা তাদের বিচার চাই ও ঘোড়ার ক্ষতিপূরণ চাই।’
মিঠামইন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর কবির জানান, তদন্ত চলছে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।